আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি অগ্নি পরীক্ষা

বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী প্রস্তুতির একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মূল্যায়ন প্রদানের জন্য ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) ৮ থেকে ১১ অক্টোবর, ২০২৩ পর্যন্ত একটি দ্বিপক্ষীয়, আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি দল মোতায়েন করেছে। দলটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সততা এবং কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে এমন কারণগুলি পরীক্ষা করে এবং সুপারিশ করে যা অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্বচ্ছ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সম্ভাবনা এবং প্রক্রিয়াতে জনসাধারণের আস্থা উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে।

বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বলিষ্ঠ ঐতিহ্য ২০৪১ সালের উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন পূরণের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করেছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ নির্বাচনী অখণ্ডতার জন্য বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ এর সম্মুখীন হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে আপোষহীন এবং পরস্পরকে নিশ্চিন্ন করে দেয়ার রাজনীতি, বাগাড়ম্বরপূর্ন রাজনৈতিক সহিংসতা, অনিশ্চয়তা এবং ভয়ের পরিবেশ। এছাড়াও রয়েছে মত প্রকাশের স্বাধীনতার সংকোচন এবং নাগরিক -রাজনৈতিক নেতা এবং অন্যান্য অংশীজনদের মধ্যে আস্থার ঘাটতি। নারী, তরুণ এবং অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীও অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বাধার সম্মুখীন হয়। বাংলাদেশ একটি সন্ধিক্ষণে রয়েছে এবং আসন্ন নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক, অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি দেশের অঙ্গীকার পূরনে অগ্নিপরীক্ষার সম্মুখীন।

প্রতিনিধিদল বিশ্বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক এবং অহিংস নির্বাচনের অগ্রগতির রোডম্যাপ হিসাবে নিম্নের সুপারিশসমূহ উপস্থাপন করে যা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

এই সুপারিশগুলি তৈরি করার জন্য, প্রতিনিধি দলটি সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে। এছাড়াও বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন; বিভিন্ন রাজনৈতিক বলয়ের দলীয় নেতা; সুশীল সমাজের প্রতিনিধি; বর্তমান ও সাবেক নারী সংসদ সদস্য; যুব, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সাথে জড়িত সংস্থার প্রতিনিধি; গণমাধ্যম প্রতিনিধি; আইনজীবি সমিতির সদস্য; এবং আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধির সাথে বৈঠক করে।

প্রতিনিধিদলের সদস্য বনি গ্লিক বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও অহিংস নির্বাচন আয়োজনে বাংলাদেশে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ সম্পর্কে যারা অবাধে তাদের মতামত জানিয়েছেন তাদের আমরা সাধুবাদ জানাই। “আমরা নির্বাচনের পরিবেশ এবং উদ্বেগ নিয়ে এই কথোপকথন শেষ করেছি, তবে আমরা আশাবাদী যে, আমাদের সুপারিশগুলি বাংলাদেশের নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে।

প্রতিনিধিদলের আরেকজন সদস্য কার্ল ইন্ডারফার্থ বলেন, “আমরা মনে করি প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে গঠনমূলক সম্পৃক্ততার অভাবই প্রধান সমস্যা। অচলাবস্থা নিরসনের সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে ২০২৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনের আগে এবং তার পরেও সৎ বিশ্বাসের সাথে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা।

প্রতিনিধিদল স্বীকার করে যে, বাংলাদেশের জনগণই চূড়ান্তভাবে তাদের নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও বৈধতা এবং তাদের দেশের গণতান্ত্রিক উন্নয়ন নির্ধারণ করবে। তাই প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমর্থন ও শক্তিশালী করার চেতনায় এই প্রাক-নির্বাচনী বিবৃতি প্রদান করেছে।

Up ArrowTop